পাইথন ল্যাঙ্গুয়েজ ভালো করে শিখতে কত মাস সময় লাগতে পারে?

আপনি যদি প্রোগ্রামিং শিখা শুরু করেন বা কোনো নতুন স্কিল যোগ করতে চান, তাহলে পাইথন হতে পারে আপনার জন্য একদম পারফেক্ট। বর্তমান সময়ে এর জনপ্রিয়তার কারণ হলো এর সহজ ভাষা এবং নানা ধরণের কাজে ব্যবহার। ওয়েব ডেভেলপমেন্ট থেকে শুরু করে, ডেটা সায়েন্স, মেশিন লার্নিং—এসব ক্ষেত্রেই পাইথনের ব্যবহার অসাধারণ।

python language

তবে, একটি কমন প্রশ্ন প্রায় সবার মনেই আসে: “পাইথন শেখার জন্য ঠিক কতদিন লাগতে পারে?” আসলে, সত্যি বলতে এর নির্দিষ্ট কোনো উত্তর নেই। আপনি কতটুকু সময় দিতে পারবেন, কীভাবে শিখবেন, এবং আপনার শেখার উদ্দেশ্য কী, তার ওপর অনেক কিছু নির্ভর করবে। 

এই আর্টিকেলে আমরা চেষ্টা করব এই প্রশ্নের সহজ এবং প্র্যাকটিকাল উত্তর দিতে। তাহলে চলুন  বিস্তারিত জেনে নেই। 

পাইথন শিখতে কত সময় লাগে? 

পাইথন ল্যাঙ্গুয়েজ শেখার সময় অনেকাংশে নির্ভর করে আপনার আগের প্রোগ্রামিং অভিজ্ঞতা, শেখার গতি, এবং কিভাবে শেখার জন্য সময় দিচ্ছেন তার ওপর। কিন্তু  সহজভাবে বলতে গেলে, পাইথন শেখার সময় দুইটি ভাগে ভাগ করা যেতে পারে: বেসিক (মূল বিষয়) এবং অ্যাডভান্সড (উন্নত বিষয়)। আসুন বিভিন্ন পরিস্থিতিতে কেমন সময় লাগতে পারে তা  বোঝার চেষ্টা করি।

১. সম্পূর্ণ নতুনদের জন্য (যাঁদের প্রোগ্রামিং অভিজ্ঞতা নেই)

যদি আপনি প্রোগ্রামিং সম্পর্কে কিছুই না জানেন অথবা পূর্বের কোন অভিজ্ঞতা না থাকে, তবে পাইথন শেখার জন্য সময় একটু বেশি লাগতে পারে। তবে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। পাইথন এমন একটি ভাষা যেটি শেখা খুবই সহজ, কারণ এর সিনট্যাক্স (কোড লেখার নিয়ম) সাধারণ ভাষার মতো।  এই জন্য আপনি চাইলে ধীরে ধীরে শিখতে পারবেন একটি স্বাভাবিক ভাষার মতো করে। 

বেসিক শেখার সময় (১-২ মাস):
এই প্রাথমিক পর্যায়ে আপনাকে পাইথনের মূল বিষয়গুলো জানতে হবে। উদাহরণ স্বরূপ, ভেরিয়েবল কিভাবে ডিক্লেয়ার করতে হয়, লুপ ব্যবহার করে কিভাবে রিপিটেড কাজ করা যায়, আর ফাংশন দিয়ে কাজগুলো কিভাবে সহজ করা যায়। বর্তমানে এগুলো শেখার জন্য ইউটিউব টিউটোরিয়াল বা ফ্রি অনলাইন কোর্স পাওয়া যায় যেগুলো দিয়ে আপনি বেসিকটা খুব সহজে শিখে নিতে পারবেন।

কী শেখা উচিত এই পর্যায়ে?

  • ভেরিয়েবল এবং ডেটা টাইপ: এগুলো কিভাবে ব্যবহার করতে হয়।
  • কন্ডিশনাল স্টেটমেন্ট: if-else কন্ডিশন দিয়ে লজিক্যাল ডিসিশন নেওয়া।
  • লুপ: for, while লুপ ব্যবহার করে একাধিক কাজ সহজে করা।
  • লিস্ট, ডিকশনারি এবং টাপল: এগুলোতে ডেটা সংরক্ষণ এবং ম্যানিপুলেশন করা।
  • ফাংশন: কোডকে সহজ এবং সংগঠিত করার জন্য ফাংশন তৈরি।

প্রথম ১-২ মাসে, আপনি যদি প্রতিদিন মাত্র ১-২ ঘণ্টা সময় দেন, তাহলে বেসিক জিনিসগুলো বুঝতে পারবেন। তবে প্র্যাকটিস করা খুব গুরুত্বপূর্ণ, নিয়মিত প্রাকটিস  না করলে পাইথন ভাষা শেখা খুব একটা সহজ হবে না।

প্র্যাকটিস এবং প্রজেক্ট (১-২ মাস):
যখন বেসিক জিনিসগুলো আপনার কাছে পরিষ্কার হয়ে যাবে, তখন ছোট প্রজেক্ট তৈরি করা শুরু করবেন। উদাহরণ স্বরূপ, একটি ক্যালকুলেটর অ্যাপ তৈরি করতে পারেন, যেটি যোগ, বিয়োগ, গুণ, ভাগ করতে পারে। নিজের পছন্দের প্রজেক্ট কিংবা  কিছু মজাদার প্রজেক্ট যেমন “গেস দ্য নাম্বার” গেম তৈরি করা  ইত্যাদি।

যখনই আপনি একটি নতুন প্রজেক্ট তৈরি করবেন, আপনার শেখার গতি আরও বাড়বে। কারণ তখন আপনি বাস্তব জীবনের সমস্যাগুলোর সমাধান শিখতে পারবেন।

২. যাঁদের প্রোগ্রামিংয়ের অভিজ্ঞতা আছে

যদি আপনি আগে থেকে প্রোগ্রামিং ভাষা জানেন, যেমন C, Java, বা JavaScript, তবে পাইথন শেখা আপনার জন্য অনেক সহজ হবে। কারণ, প্রোগ্রামিংয়ের লজিক এবং চিন্তাভাবনা আপনার কাছে পরিষ্কার থাকবে।

বেসিক শেখার সময় (১ মাস):
যেহেতু আপনার কোডিং ব্যাকগ্রাউন্ড আছে, তাই পাইথনের বেসিক সিনট্যাক্স শেখা ১ মাসেরও কম সময়ে সম্ভব। উদাহরণ স্বরূপ, আপনি যদি লুপ এবং কন্ডিশনাল স্টেটমেন্ট সম্পর্কে আগে থেকেই জানেন, তবে পাইথনে সেগুলো কিভাবে কাজ করে তা বুঝতে বেশি সময় লাগবে না, অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় যে অভিজ্ঞ প্রোগ্রামাররা এই বিষয়গুলো মাত্র এক থেকে দুইদিনেও শিখে যায়। 

কীভাবে শেখা শুরু করবেন?

  • একটি পাইথন IDE (যেমন PyCharm বা VS Code) সেট আপ করে ফেলবেন।
  • পাইথনের ডকুমেন্টেশন পড়া শুরু করবেন।
  • ছোট স্ক্রিপ্ট লিখে প্র্যাকটিস করবেন, যেমন “Hello World” প্রোগ্রাম, নাম্বার যোগ করার কোড ইত্যাদি।

অ্যাডভান্সড শেখা (১-২ মাস):
এই ক্ষেত্রে যেহেতু আপনার বেসিক কোডিং ধারণা আছে, তাই আপনি সরাসরি অ্যাডভান্সড বিষয়গুলোতে যেতে পারেন, ডিফিকাল্ট বিষয়গুলো শিখতে পারেন। উদাহরণ স্বরূপ,

  • ওবজেক্ট-ওরিয়েন্টেড প্রোগ্রামিং (OOP): ক্লাস এবং অবজেক্ট ব্যবহার করা।
  • লাইব্রেরি ব্যবহার: Pandas, NumPy, অথবা Requests লাইব্রেরি।
  • API: কিভাবে REST API ব্যবহার করে ডেটা আনা যায়।

প্রজেক্ট তৈরি (১-২ মাস):
এতদিন আপনি যে বিষয়গুলো শিখেছেন  সেগুলোর সঠিক ব্যবহার শুরু হবে প্রজেক্ট তৈরি করার সময়। উদাহরণ স্বরূপ, আপনি একটি ওয়েদার ফোরকাস্ট অ্যাপ তৈরি করতে পারেন, যেখানে API থেকে ডেটা নিয়ে দেখানো হবে। অথবা একটি ডাটাবেস কানেকশন তৈরি করে ডেটা ম্যানেজমেন্ট অ্যাপ বানাতে পারেন। অথবা আপনার পছন্দমত কোন ডিফিকাল্ট অ্যাপ তৈরি করা। 

যদি উপরের বিষয়গুলোকে একত্রে করি তাহলে সংক্ষেপে বলা যায় যে, অভিজ্ঞ প্রোগ্রামাররা সাধারণত ২-৩ মাসেই পাইথনের উপর ভাল দক্ষতা অর্জন করা সক্ষম হয় তবে যদি ভালোভাবে প্র্যাকটিস করেন।

৩. বিশেষ উদ্দেশ্যে শেখার জন্য সময়

অনেক ক্ষেত্রে পাইথন শেখার সময় কতটা লাগবে তা নির্ভর করে আপনার শেখার উদ্দেশ্যের উপর। উদাহরণ স্বরূপ, যদি আপনার লক্ষ্য শুধুমাত্র ডেটা অ্যানালাইসিস, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, কিংবা মেশিন লার্নিং শিখে কাজ করা হয়, তাহলে শেখার পদ্ধতি এবং সময় ভিন্ন হবে। একটি প্রধান উদ্দেশ্য এবং কি শিখতে কত সময় লাগতে পারে তার একটি সংক্ষিপ্ত এবং আনুমানিক উদাহরণ দেয়া হলো। 

ডেটা অ্যানালাইসিস শেখার জন্য সময়:

  • বেসিক শেখা (১-২ মাস): প্রথমে পাইথনের বেসিক যেমন লুপ, কন্ডিশন, এবং ফাংশন সম্পর্কে ধারণা নিতে হবে। এগুলো শেখা হয়ে গেলে, Pandas দিয়ে ডেটা ম্যানিপুলেশন শেখা শুরু করার চেষ্টা করবেন। উদাহরণ স্বরূপ, ডেটাসেট থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য বের করা বা সেগুলো ফিল্টার করা  ইত্যাদি সমূহ।
  • অ্যাডভান্সড টপিক (১-২ মাস): এই পর্যায়ে Matplotlib বা Seaborn দিয়ে ডেটা ভিজ্যুয়ালাইজেশন শেখা লাগবে। এছাড়া বড় ডেটাসেট নিয়ে কাজ করতে হলে NumPy ব্যবহার শিখতে হবে।

ওয়েব ডেভেলপমেন্ট শেখার জন্য সময়:

 মূলত পাইথন দিয়ে ওয়েবসাইট তৈরি করতে Django বা Flask ফ্রেমওয়ার্ক ব্যবহার করা হয়।  যা আমরা পূর্বের আর্টিকেলে ভালোভাবে আলোচনা করেছি।  চাইলে পূর্বে আর্টিকেলটি পড়ে নিতে পারেন।  তবে,

  • বেসিক শেখা (১ মাস): পাইথনের বেসিক শিখেই Django বা Flask ফ্রেমওয়ার্ক ব্যবহার শুরু করা যায়। এই ক্ষেত্রে , প্রথম দিকে সহজ ওয়েব অ্যাপ্লিকেশন তৈরি করা শিখবেন, যেমন লগইন ফর্ম, ডাটাবেস কানেকশন  ইত্যাদি।
  • অ্যাডভান্সড শেখা (২-৩ মাস):  বেসিক শেখা হয়ে গেলে তারপর Django REST Framework বা Flask API ব্যবহার করে ডাইনামিক এবং স্কেলেবল ওয়েবসাইট তৈরি শেখা সম্ভব।  তবে ডায়নামিক এবং বড় ধরনের প্রজেক্ট করার পূর্বে অবশ্যই ভালোভাবে প্র্যাকটিস করা আবশ্যকীয়। 

মেশিন লার্নিং শেখার জন্য সময়:

 মেশিন লার্নিং মূলত অনেক ডীপ একটি বিষয়, মেশিন লার্নিং শেখার জন্য পাইথনের সঙ্গে কিছু লাইব্রেরি, যেমন Scikit-learn, TensorFlow, এবং Keras শিখতে হবে।  এক্ষেত্রে, 

  • বেসিক শেখা (২-৩ মাস): প্রথমে পাইথনের লজিক্যাল অংশ এবং মেশিন লার্নিং কনসেপ্ট সম্পর্কে ধারণা নিতে হবে,  মূলত এটির জন্য প্রাথমিকভাবে একটু বেশি সময় ব্যয় করতে হয়। উদাহরণ স্বরূপ, ডেটা ক্লিনিং, মডেল ট্রেনিং, এবং ভ্যালিডেশন শেখা  ইত্যাদি।
  • অ্যাডভান্সড শেখা (৪-৬ মাস):  বেসিক শেখা হয়ে গেলে ডিপ লার্নিং, নিউরাল নেটওয়ার্ক, এবং রিয়েল-ওয়ার্ল্ড প্রজেক্ট তৈরি শেখার সময় আসবে এই পর্যায়ে।  কখনো কখনো অ্যাডভান্স ভাবে এই বিষয়গুলো শিখতে গেলে এক বছরেরও অধিক সময় লাগতে পারে। 

সর্বশেষে বলা যায় যে, আপনার শেখার উদ্দেশ্য যত নির্দিষ্ট হবে, সময়ও তত কম লাগবে। যেমন শুধুমাত্র Django শিখতে ৩-৪ মাস যথেষ্ট, তবে মেশিন লার্নিংয়ের জন্য কমপক্ষে ৬ মাস সময় দিতে হবে।  এরকম ভাবে উদ্দেশ্য অনুযায়ী সময় কম বেশি  লাগতে পারে  পাইথন ভাষা শিখতে গেলে। 

প্রতিদিন কত সময় দিলে পাইথন শেখা দ্রুত হবে?

প্রতিদিন কত সময় দিলে পাইথন শেখা দ্রুত হবে

এই প্রশ্নের নির্দিষ্ট কোন উত্তর নেই তবে পাইথন শেখার সময়ের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো প্রতিদিন শেখার জন্য কতটা সময় দিতে পারবেন। এটি আপনার শেখার গতিকে সরাসরি প্রভাবিত করে, এবং কত দ্রুত শিখতে পারবেন তা প্রভাবিত করবে ।

প্রতিদিন ১-২ ঘণ্টা সময় দিলে:

যদি আপনি চাকরি বা পড়াশোনার পাশাপাশি প্রতিদিন ১-২ ঘণ্টা সময় দেন, তাহলে বেসিক বিষয়গুলো শিখতে প্রায় ৩-৪ মাস সময় লাগবে  তবে আপনি যদি একটু আগ্রহী টাইপের হয়ে থাকেন তাহলে কম সময় লাগতে পারে আর এক্ষেত্রে যদি আপনি প্রোগ্রামিং বিষয়টা কম বোঝেন তাহলে আরও বেশি সময়  লাগতে পারে। এই সময়ের মধ্যে আপনাকে পাইথনের বেসিক সিনট্যাক্স, লজিক্যাল অপারেশন, এবং ছোটখাটো প্রজেক্ট বানানো শিখতে হবে।

টিপস:

  • রোজকার কাজের পরে একটি নির্দিষ্ট সময় ঠিক করবেন, যখন আপনি মানসিকভাবে ফ্রেশ থাকবেন।
  • ছোট প্রজেক্ট বা চ্যালেঞ্জ নিয়ে কাজ শুরু করবেন, যাতে শেখা মজার হয়  এবং শেখার প্রতি মনোযোগ থাকে।

প্রতিদিন ৪-৫ ঘণ্টা সময় দিলে:

আপনি যদি একজন ফ্রী টাইপের ব্যক্তি হন আর যদি আপনি প্রতিদিন ৪-৫ ঘণ্টা দিতে পারেন, তাহলে বেসিক শেখা মাত্র ১-২ মাসেই শেষ হবে  বলে আশা করা যায়।  আর বেসিকগুলো শেখা হয়ে গেলেই এরপর অ্যাডভান্সড বিষয়গুলোতে ফোকাস দিতে পারবেন, যেমন API ডেভেলপমেন্ট বা লাইব্রেরি ব্যবহার।

উদাহরণ স্বরূপ সময় ভাগ করে নিন:

  • প্রথম ১ ঘণ্টা নতুন বিষয় শেখার জন্য।
  • পরবর্তী ২ ঘণ্টা প্র্যাকটিস এবং সমস্যা সমাধান।
  • শেষ ১-২ ঘণ্টা একটি প্রজেক্টে কাজ করার জন্য।

প্রতিদিন পুরো সময় দিলে:

যদি আপনি পুরো সময় পাইথন শেখার জন্য দিতে পারেন (প্রতিদিন ৮ ঘণ্টার মতো), তবে ১ মাসেই আপনি বেসিক থেকে অ্যাডভান্সড লেভেলে যেতে পারবেন। তবে, এই সময়ে নিজেকে অতিরিক্ত চাপ না দিয়ে ধীরে ধীরে শেখার অভ্যাস গড়ে তোলা লাভজনক হবে।  কেননা একসাথে অনেকগুলো বিষয়ে শিখতে গেলে অনেক বিষয় গোলমাল পাকিয়ে ফেলবেন।  এজন্য ধীরে ধীরে সময় নিয়ে শেখায় বুদ্ধিমানের কাজ হবে। 

ধারাবাহিকতা:

  হঠাৎ একদিন এ ১০ ঘন্টা ব্যয় করার পরিবর্তে প্রতিদিন ১ ঘণ্টা হলেও ধারাবাহিকভাবে শেখার অভ্যাস হলে সময় কম লাগবে। কারণ, নিয়মিত প্র্যাকটিস না করলে আগের শেখা ভুলে যাওয়ার  প্রবল সম্ভাবনা থাকে।  এজন্য নিয়মিত একটি নির্দিষ্ট সময় টার্গেট করে কাজ করার চেষ্টা করবেন তাহলে দ্রুত পাইথন ভাষা আয়ত্ত করতে পারবেন। 

পাইথন শেখার জন্য অনলাইনে কী কী রিসোর্স পাওয়া যায়?

পাইথন শেখার জন্য অনলাইনে অনেক অনেক  দরকারি ফ্রি রিসোর্স রয়েছে, যেগুলো ব্যবহার করে আপনি সহজেই শুরু করতে পারেন। তবে যেটি সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ, সেটি হলো আপনার শেখার ইচ্ছা এবং সময় দেওয়ার মানসিকতা।  মিছে কয়েকটি  রিসোর্স সম্পর্কে তথ্য দেয়া হলোঃ

১. ইউটিউব টিউটোরিয়াল:
ইউটিউব এখন যেকোন বিষয় শেখার এক বিশাল উৎস। এখানে হাজার হাজার ফ্রি ভিডিও টিউটোরিয়াল আছে। বেশিরভাগ টিউটোরিয়াল সহজ ভাষায় করা এবং ধাপে ধাপে শেখায়। উদাহরণ স্বরূপ:

  • Programming Hero (বাংলা): সহজ ভাষায় পাইথনের বেসিক এবং প্রজেক্ট তৈরির টিউটোরিয়াল।
  • Corey Schafer (ইংরেজি): এর ভিডিওগুলো ডীপ এবং অ্যাডভান্স লেভেলের বিষয়গুলো কভার করে।

ইউটিউব ব্যবহার করে কোডিং শেখার সবথেকে বড় সুবিধা হলো, আপনি ভিডিও দেখে বিভিন্নভাবে কোড প্র্যাকটিস করতে পারবেন এবং প্রয়োজনে বারবার দেখে  দেখে বুঝতে পারবেন।

২. অনলাইন কোর্স প্ল্যাটফর্ম:
যদি একটু গাইডলাইন সহকারে বিষয়গুলো শিখতে চান, তবে Udemy, Coursera, বা edX এর মতো প্ল্যাটফর্মগুলো ব্যবহার করতে পারেন। বাংলাদেশের উন্নতমানের প্রতিষ্ঠানগুলোও বর্তমানে পাইথন ভাষা শেখানোর কোর্স সেল করতেছে। সেগুলো ক্রয় করতে পারেন তবে বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম থেকে কোর্স ক্রয় করার সুবিধা হল এখানে নিয়মিত আপডেট কন্টেনগুলো দেয়া হয়। 

  • Udemy: এখানে পাইথনের উপর অনেক কোর্স পাওয়া যায়, যা প্রায়ই ডিসকাউন্টে মাত্র ৫০০-৬০০ টাকায় কিনতে পারবেন।
  • Coursera: স্ট্যানফোর্ড বা MIT এর মতো বড় প্রতিষ্ঠানের কোর্স করার সুযোগ পাবেন।
  • edX: এটি মূলত একাডেমিক লেভেলের কোর্স অফার করে।

৩. ইন্টারেক্টিভ লার্নিং ওয়েবসাইট:
অনলাইনে অনেক ওয়েবসাইটে ইন্টারেক্টিভভাবে কোড শেখানো হয়, যেখানে আপনি সরাসরি ব্রাউজারে কোড লিখে প্র্যাকটিস করতে পারবেন। উদাহরণ স্বরূপ:

  • W3Schools: বেসিক শিখতে চমৎকার একটি প্ল্যাটফর্ম।
  • Codecademy: প্র্যাকটিক্যাল লার্নিংয়ের জন্য ভালো।
  • Kaggle: যদি ডেটা সায়েন্স বা মেশিন লার্নিংয়ের জন্য পাইথন শিখতে চান, তবে এটি সত্যিই অসাধারণ। [ট্রাই করে দেখতে পারেন]

৪. পাইথনের অফিশিয়াল ডকুমেন্টেশন:
যদি আপনার একটু অ্যাডভান্স লেভেলের   পাইথন ল্যাঙ্গুয়েজ এর জ্ঞান থাকে, তাহলে পাইথনের অফিসিয়াল ডকুমেন্টেশন আপনার সেরা রিসোর্স হতে পারে। এখানে প্রতিটি টপিক ডিটেইলে ব্যাখ্যা করা হয়েছে।  যা আপনাকে সব থেকে বেশি সুবিধা প্রদান করবে প্রোগ্রামিং করার সময়। 

উপসংহার

যে কারণেই হোক, পাইথন শেখা কিন্তু শুধুমাত্র প্রফেশনাল স্কিল অর্জনের জন্যই না, এর পাশাপাশি এটা আপনাকে নতুন কিছু শিখতে এবং সমস্যার সমাধান করতে অনেক সাহায্য করবে। আপনি যদি প্রতিদিন একটু সময় দেন এবং ধারাবাহিকভাবে অনুশীলন করেন, তাহলে শেখার পথটা অনেক সহজ হয়ে যাবে। মনে রাখতে হবে, শেখার এই যাত্রাটা আসলে আপনার জন্যই। তো আজকের এই আর্টিকেল এই পর্যন্তই এরকম আরো  ইনফরমেটিভ তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটের উন্নয়নের আর্টিকেল গুলো দেখতে পারেন। 

Leave a Comment