আজকাল অনলাইনে টাকা আয়ের কথা বললেই অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের নামটা খুব সহজেই উপরের সারিতে চলে আসে। অনেকেই ভেবে থাকেন, এই অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কি আর কীভাবে কাজ করে? সহজ ভাষায় বললে, অন্যের প্রোডাক্ট বা সার্ভিস আপনি রিকমেন্ড করেন, আর কেউ সেটা কিনলে আপনি কমিশন পাবেন।

খুব একটা কঠিন কিছু নয়, তাই না? এই পদ্ধতিতে অনেকেই এখন ভালো টাকা ইনকাম করছেন। তাই, যারা ফ্রিল্যান্সিং বা অনলাইন ইনকামে নতুন, তাদের জন্য অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং হতে পারে একটি অন্যতম উল্লেখযোগ্য অনলাইন থেকে ইনকাম করার সুযোগ। চলুন, তাহলে আজকের এই আর্টিকেলে জেনে নেই অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং নিয়ে বিস্তারিত।
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং মানে কি?
যদি আমি আমার ভাষায় বলি, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং হচ্ছে এমন একটা প্রক্রিয়া যেখানে আপনি অন্যের প্রোডাক্ট বা সার্ভিস প্রোমোট করেন আর এর বিনিময়ে প্রত্যেকটি প্রোডাক্ট বিক্রয়ের বিপরীতে কিছু কমিশন পাবেন। ধরুন, আপনার পরিচিত কোনো ব্র্যান্ডের প্রোডাক্ট আপনি আপনার বন্ধুদের রিকমেন্ড করছেন। যদি তারা সেই প্রোডাক্ট কিনে, তাহলে সেই ব্র্যান্ড আপনাকে কমিশন দেবে। এটিই মূলত অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং।
মূলত এটি এমন একটি বিজনেস মডেল যা অনেকের জন্য প্যাসিভ ইনকামের উৎস হিসেবে কাজ করে। বিশেষ করে, যাদের বড় অডিয়েন্স রয়েছে, তারা খুব সহজে এই মডেলের মাধ্যমে আয় করতে পারেন। বর্তমানে অনেক মানুষ অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংকে ফুল-টাইম ক্যারিয়ার হিসেবে গ্রহণ করছে।
তবে আপনি অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কে যতটা সহজ ভাবে দেখা হয় ততটা সহজ নয় এর ভিতরেও লুকিয়ে আছে অনেক বিষয়। নিচে আমরা আজকে কিছু বিষয়কে সংক্ষেপে জানার চেষ্টা করব।
এফিলিয়েট মার্কেটিং কিভাবে শুরু করবেন: Step by Step গাইড

আচ্ছা চলুন কিভাবে আপনি একজন নতুন হয়ে আপনার অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর যাত্রা শুরু করবেন সেটা বিস্তারিত আকারে জেনে নেই।
১. প্রপার নিস সিলেকশন
এফিলিয়েট মার্কেটিং শুরু করার আগে সর্বপ্রথম কাজ হলো একটা নিস বা বিষয় বেছে নেওয়া। সহজ ভাষায় বললে, এমন একটা বিষয় নিয়ে কাজ করতে হবে যেটাতে আপনার আগ্রহ আছে এবং যেটা নিয়ে মানুষজন বেশি খোঁজখবর করে এবং এর পাশাপাশি আপনার ভালো মানের নলেজ রয়েছে। ধরে নেন, আপনি ফিটনেস বা মোবাইল টেকনোলজি নিয়ে বেশ ভালো জানেন, সেক্ষেত্রে এগুলোর মধ্যে থেকেই একটা বেছে নিন। এভাবে কাজ করতে গেলে আপনি বিষয়টা সহজে বুঝতে পারবেন এবং অন্যদেরও ভালোভাবে বোঝাতে পারবেন। যা এই বিজনেস মডেলে যা এই বিজনেস মডেলে সব থেকে বড় ভূমিকা রাখে।
এছাড়াও, নিস বাছাই করার সময় বাজারে এর চাহিদা কেমন, সেটাও দেখতে হবে। উদাহরণ স্বরূপ, ফিটনেস এবং স্বাস্থ্য সম্পর্কিত বিষয়গুলো বর্তমানে বেশ জনপ্রিয়, কারণ মানুষ নিজের স্বাস্থ্য নিয়ে অনেক সচেতন। এভাবে আপনার আগ্রহ এবং বাজারের চাহিদার মধ্যে ব্যালেন্স রেখে নিস বাছাই করাই বুদ্ধিমানের কাজ।
এই বিষয়ে আরো বিস্তারিত জানতে চাইলে কমেন্ট করতে পারেন পরবর্তীতে কিভাবে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর জন্য প্রপার নিস ইলেকশন করতে হয় তাহলে সেই বিষয়ে একটি বিস্তারিত আর্টিকেল দেয়া যাবে।
২. একটি ব্লগ বা ওয়েবসাইট সেটআপ করা
নিস বাছাই হয়ে গেলে পরের ধাপ হলো একটা ব্লগ বা ওয়েবসাইট তৈরি করা, অর্থাৎ যেখানে আপনি প্রোডাক্টগুলো প্রমোশন করবেন। ওয়েবসাইট ছাড়া এফিলিয়েট মার্কেটিং করা অনেক কঠিন হয়ে যায়, তাই এই ধাপটা স্কিপ করা যাবে না। এখন, ওয়েবসাইট বানানো কিন্তু তেমন কঠিন কিছু নয়। আপনি চাইলে ওয়ার্ডপ্রেস বা উইক্সের মতো প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে খুব সহজে একটা সুন্দর ব্লগ বা ওয়েবসাইট বানিয়ে নিতে পারেন।
এখানে একটা বিষয় মাথায় রাখতে হবে—ওয়েবসাইটটা যেন দেখতে সুন্দর হয় এবং ব্যবহার করা সহজ হয় এবং এর পাশাপাশি আপনার বিষয়বস্তুর সাথে মিল থাকে। আপনার ওয়েবসাইটের টাইটেল, ডিসক্রিপশন, এবং কনটেন্ট এমনভাবে সাজান যাতে ভিজিটররা সহজে প্রধান বিষয়গুলো বুঝতে পারে এবং বারবার আসতে চায়। ওয়েবসাইটটা যেন এমন হয় যে, কেউ ঢুকলে তাকে আর বের হতে ইচ্ছে না করে। তবে বেশি এডিটিং করতে গিয়ে আবার ওয়েবসাইটের লোডিং স্পিড যেন কম না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
৩. এফিলিয়েট প্রোগ্রামে যোগদান
ওয়েবসাইট তৈরি হয়ে গেলে এখন আপনার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো এফিলিয়েট প্রোগ্রামে যোগ দেওয়া। ভাবছেন, এফিলিয়েট প্রোগ্রাম কী? এটা আসলে একটা মাধ্যম যেখানে বিভিন্ন কোম্পানি আপনাকে তাদের প্রোডাক্ট প্রমোট করার জন্য কমিশন দেয়। সহজভাবে বললে, আপনি তাদের প্রোডাক্ট আপনার ওয়েবসাইটে প্রমোট করবেন এবং যদি কেউ সেই প্রোডাক্ট কেনে, তাহলে আপনি একটা নির্দিষ্ট কমিশন পাবেন।
এখন প্রশ্ন হলো, কোন প্রোগ্রামে যোগ দেবেন? এটা নির্ভর করবে আপনার নিসের ওপর। যদি আপনি ফিজিক্যাল বা টেকনোলজিক্যাল প্রোডাক্ট নিয়ে কাজ করেন, তাহলে হয়তো অ্যামাজন অ্যাসোসিয়েটস বা টেক রিলেটেড অন্য প্রোগ্রামগুলো ভালো হবে। আবার, ফ্যাশন বা বিউটি নিয়ে কাজ করলে শেয়ারএসেল বা অন্যান্য ফ্যাশন ব্র্যান্ডের এফিলিয়েট প্রোগ্রাম বেছে নেওয়া যাবে। সত্যি করে বলতে গেলে এটি সত্যিই ডিপেন্ড করবে আপনার নিজের উপর যে আপনি কোন প্রোগ্রামে যোগ দিবেন। তবে আমরা নেক্সট আর্টিকেলগুলোতে সেরা অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রামগুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করব।
তবে, সঠিক প্রোগ্রাম বেছে নেওয়া অনেক গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এখান থেকেই আপনার আয় শুরু হবে। তাই ধীরে ধীরে এবং ভালোভাবে রিসার্চ করে এই ধাপটা সম্পন্ন করা উচিত। এজন্য সময় নিয়ে সবকিছু দেখে শুনে তারপর আপনার পছন্দের অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রামের জয়েন দেয়ার চেষ্টা করবেন।
এভাবে ধাপে ধাপে এগোলে এফিলিয়েট মার্কেটিং শুরু করা খুব সহজ হয়ে যাবে, এবং আপনি দ্রুত সফলতা পাবেন। এবং সফলতার দ্রুত হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে।
৪. কনটেন্ট তৈরি এবং প্রোডাক্ট প্রমোট করা
এফিলিয়েট মার্কেটিংয়ে সফল হতে গেলে কনটেন্ট তৈরি করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এখানে মূল কথা হলো, আপনার কনটেন্ট যত ভালো হবে, তত বেশি ভিজিটর আসবে এবং তত বেশি বিক্রি হবে। কিন্তু কনটেন্ট মানে কী? সহজভাবে বললে, আপনি যে প্রোডাক্ট প্রমোট করছেন, সেটার সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য, ইউজারের অভারল অভিজ্ঞতা, সুবিধা-অসুবিধা এসব তুলে ধরতে হবে।
মনে করুন, আপনি ফিটনেস গিয়ার নিয়ে কাজ করছেন। এখন, আপনি যদি শুধু প্রোডাক্টের ফিচার বলেই শেষ করেন, তাহলে কনটেন্টটা তেমন আকর্ষণীয় হবে না। তার চেয়ে বরং আপনি যদি প্রোডাক্টের ব্যবহার কেমন, কাদের জন্য উপযুক্ত, এবং কীভাবে ব্যবহার করলে সর্বোচ্চ সুবিধা পাওয়া যাবে এসব বলেন, তাহলে সেটা অনেক বেশি কার্যকর এবং বেশি গ্রহণযোগ্য হবে।
আপনার কনটেন্ট যেন ভিজিটরদের জন্য উপকারী হয়, এটা মাথায় রাখতে হবে। পাশাপাশি, কনটেন্টের মধ্যে প্রোডাক্ট কেনার লিঙ্ক, রিভিউ, এবং টিপস দিয়ে দিলে ভিজিটররা সহজেই সিদ্ধান্ত নিতে পারবে। এভাবে কনটেন্টের মাধ্যমে আপনি শুধু ভিজিটরদের সাহায্য করছেন না, বরং প্রোডাক্ট বিক্রি বাড়াচ্ছেন।
৫. ট্রাফিক জেনারেট এবং মোনেটাইজেশন
কনটেন্ট তৈরি হয়ে গেলে পরের ধাপ হলো ট্রাফিক আনা। ট্রাফিক মানে আপনার ওয়েবসাইটে কজন মানুষ আসছে, সেটা। যত বেশি ভিজিটর আসবে, তত বেশি সম্ভাবনা থাকবে আপনার প্রোডাক্ট বিক্রির। এখন প্রশ্ন হলো, কীভাবে ট্রাফিক বাড়াবেন?
সোশ্যাল মিডিয়া এই কাজে আমার মতে সবথেকে বেশি সাহায্য করতে পারে। আপনি ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, বা টুইটারের মতো প্ল্যাটফর্মে আপনার কনটেন্ট শেয়ার করে ভিজিটর আনতে পারেন। এছাড়া, SEO বা সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন করেও ট্রাফিক বাড়ানো যায়। মানে, গুগলে কেউ যদি আপনার নিসের সাথে মিল রেখে কিছু সার্চ করে, তাহলে আপনার ওয়েবসাইট যেন প্রথম দিকে আসে। শুধুমাত্র google নয় এর পাশাপাশি বিং এবং বর্তমানে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর মতো সার্চ ইঞ্জিনগুলোতে যেন ভালো অবস্থান করতে পারে সেদিকেও লক্ষ্য রাখতে হবে। আর বর্তমান সময়ে পিন্টারেস্ট মার্কেটিং নতুনদের জন্য অন্যতম একটি সহায়ক এবং গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সাহায্য করছে এবং মার্কেটে নতুন মার্কেটারদেরকে টিকিয়ে রাখতে ও সাহায্য করছে। সে ক্ষেত্রে আপনি চাইলে পিন্টারেস্ট কেউ ব্যবহার করতে পারেন।
আরেকটা বিষয় হলো ইমেল মার্কেটিং। প্রথমে আপনার ওয়েবসাইটে যারা নিয়মিত ভিজিটর আসে তাদের কাছ থেকে তাদের ইমেইল কালেক্ট করার চেষ্টা করবেন তারপর আপনি চাইলে সেই সাবস্ক্রাইবারদের জন্য নিয়মিত ইমেল পাঠিয়ে নতুন কনটেন্টের খবর দিতে পারেন। এতে ভিজিটরদের সাথে একটা সম্পর্ক তৈরি হয় এবং তারা বারবার আপনার ওয়েবসাইটে আসতে চায়। তবে অতিরিক্ত ইমেইল মার্কেটিং নিয়ে এখন খুব একটা ভালো ফলাফল পাওয়া যাচ্ছে না এজন্য এটা থার্ড পার্টি হিসেবে ধরে নিবেন যদি অন্য পদ্ধতি গুলো কাজ না করে।
৬. কনভার্শন এবং অপটিমাইজেশন
আপনার ওয়েবসাইটে ট্রাফিক আসা শুরু হলে এখন ফোকাস দিতে হবে কনভার্শন রেট বাড়ানোর দিকে। সহজ কথায়, কনভার্শন মানে হলো, যারা আপনার ওয়েবসাইটে আসছে, তাদের মধ্যে কতজন আসলেই প্রোডাক্ট কিনছে। কনটেন্ট ভালো হলেই কনভার্শন বাড়বে, কিন্তু সেটা নিয়ে নিয়মিত কাজ করতে হবে।
এখানে আপনাকে দেখতে হবে, আপনার কোন ধরনের কনটেন্ট বেশি ভালো কাজ করছে। ধরুন, আপনি যদি দেখেন আপনার রিভিউ আর্টিকেল থেকে বেশি সেল হচ্ছে, তাহলে সেই ধরনের কনটেন্ট আরো বেশি তৈরি করতে হবে। এছাড়া, ওয়েবসাইটের ডিজাইনও কনভার্শনে বড় ভূমিকা রাখে। আপনার ওয়েবসাইটের লেআউট, প্রোডাক্ট ডিসপ্লে, এবং কল টু অ্যাকশন বোতামগুলো যদি ঠিকঠাক থাকে, তাহলে ভিজিটরদের জন্য কেনা অনেক সহজ হয়ে যাবে।
এভাবে ধাপে ধাপে কাজ করলে এফিলিয়েট মার্কেটিং থেকে আপনার আয় বাড়বে এবং আপনি সফল হবেন। ধৈর্য ধরতে হবে এবং নিয়মিত চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং শুরু করার জন্য কি কি প্রয়োজন?
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং শুরু করতে গেলে কিছু নির্দিষ্ট দক্ষতা এবং প্রস্তুতির প্রয়োজন হয়, তবে এটি সবার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। তবে আপডেট মার্কেটিং শুরু করার ক্ষেত্রে জিনিসগুলো প্রয়োজন হয় স্বাভাবিকভাবে সেগুলো নিয়ে সংক্ষেপে আলোচনা করা হলো। তবে আমরা যে উপরে বিষয়গুলো আলোচনা করলাম সেগুলোই মুখ্য বিষয় তবে এর পাশাপাশি আর হলো,
১। আপনাকে একটি নির্ভরযোগ্য আপনার সাথে মিলে যায় এমন প্ল্যাটফর্ম বা অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রামে যোগ দিতে হবে। বর্তমান সময়ে কিছু উল্লেখযোগ্য একই এক প্রোগ্রাম রয়েছে যেগুলো পুরো বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় যেমন, Amazon Associates, ClickBank, ShareASale ইত্যাদি ।
২। আপনার যদি একটি ব্লগ, ইউটিউব চ্যানেল বা সোশ্যাল মিডিয়া প্রোফাইল থাকে, তবে সেখানে রেগুলার কনটেন্ট তৈরি করতে হবে। তবে শুধুমাত্র কনটেন্ট রেগুলার পাবলিশ করলেই হবে না কন্টেন্টকে কোয়ালিটি সম্পূর্ণ হতে হবে। এই কনটেন্টগুলো প্রোডাক্ট রিভিউ, টিউটোরিয়াল, বা সাধারণ তথ্যভিত্তিক পোস্ট হয়ে থাকে। আর আবশ্যক এবং প্রয়োজনীয় বিষয় হচ্ছে, এই কনটেন্টগুলোর মধ্যে আপনার অ্যাফিলিয়েট লিংক থাকা।
৩। এছাড়া, আপনার একটি নির্দিষ্ট টার্গেট অডিয়েন্স থাকা সব থেকেগুরুত্বপূর্ণ এবং অত্যাবশক্তি ও বিষয়। কারণ আপনার প্রোমোট করা প্রোডাক্ট তাদের জন্য উপযুক্ত হতে হবে তা আপনাকে নিশ্চিত করতে হবে। আপনি যদি একটি নির্দিষ্ট নিসের জন্য কাজ করেন, তবে সফল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
৪। সবশেষে, সঠিক এবং ইফেক্টিভ মার্কেটিং স্ট্রাটেজি প্রয়োজন। বেসিকালি সঠিকভাবে SEO ব্যবহার করে আপনার কনটেন্ট অপ্টিমাইজ করতে হবে, যাতে এটি সার্চ ইঞ্জিনে ভালোভাবে র্যাঙ্ক করে তাহলে আপনি কোন রকম কষ্ট ছাড়া ভবিষ্যতে নিয়মিত ট্রাফিক পেতে থাকবেন যা হবে সম্পূর্ণ ফ্রি এবং আপনার জন্য লাভজনক। এছাড়া সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং, ইমেইল মার্কেটিং, এবং পেইড অ্যাডস ব্যবহার করেও আপনি আপনার কনটেন্টকে প্রোমোট করতে পারেন। মানে সহজ ভাবে বলতে গেলে যেটা আপনার পছন্দ হয় এবং যে পদ্ধতি ভালো ফলাফল এনে দেয় সেই পদ্ধতি ইউজ করতে পারেন।
এফিলিয়েট মার্কেটিং করে মাসে কত টাকা ইনকাম করা যায়?

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং থেকে মাসে কত টাকা ইনকাম করা যায়, এটি সম্পূর্ণ নির্ভর করে আপনার কাজের ধরণ, প্রচেষ্টা, এবং অডিয়েন্সের উপর। সত্যি বলতে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে কত টাকা ইনকাম করা যায় সেটা নির্দিষ্ট করে বলা অসম্ভব। নতুন হিসেবে শুরুতে হয়তো আপনার ইনকাম কম হবে, তবে ধীরে ধীরে যখন আপনার অডিয়েন্স বাড়বে এবং আপনার কনটেন্ট আরও বেশি মানুষ দেখবে, তখন ইনকাম বাড়বে। মূলত একটি প্রত্যেকটি বিজনেস মডেলের একটি অংশ।
অনেক সফল অ্যাফিলিয়েট মার্কেটার মাসে হাজার হাজার ডলার আর্ন করে থাকেন। যেমন, কিছু মার্কেটার মাসে ১০০ ডলার থেকে শুরু করে ১০,০০০ ডলার বা তার বেশি আয় করে থাকে। তবে আমি আবার বলছি, এটি নির্ভর করে আপনার অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রামের কমিশন রেট, আপনার কনটেন্টের অডিয়েন্স, এবং আপনি কতটা সময় ও শ্রম দিচ্ছেন তার উপর।
আপনি যদি নিয়মিত কনটেন্ট তৈরি করেন এবং আপনার অডিয়েন্সকে সঠিকভাবে টার্গেট করেন, তবে দীর্ঘমেয়াদে আপনি ভালো ইনকাম করতে পারবেন। এছাড়া, প্যাসিভ ইনকাম হওয়ার কারণে একবার কনটেন্ট তৈরি করার পরেও আপনি দীর্ঘদিন ধরে আয় করতে পারবেন।
এফিলিয়েট মার্কেটিং এ কত পারসেন্ট কমিশন দেওয়া হয়?
স্বাভাবিকভাবেই অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ে কমিশন রেট বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম এবং প্রোডাক্টের উপর নির্ভর করে থাকে। সাধারণত, এভারেজে বেশিরভাগ অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম এর কমিশন রেট ৫% থেকে ৫০% পর্যন্ত হয়ে থাকে। তবে মার্কেট ভেদে এর পরিমাণ অনেক কম বেশি হয় উদাহরণ স্বরূপ, Amazon Associates প্রোগ্রামে প্রোডাক্টের উপর ভিত্তি করে কমিশন রেট ১% থেকে ১০% পর্যন্ত হয়ে থাকে।
তবে অন্যদিকে, প্রোগ্রাম ভেদে কিছু ডিজিটাল প্রোডাক্ট বা সার্ভিসে কমিশন রেট অনেক বেশি হয়। যেমন, সফটওয়্যার বা কোর্স প্রোমোশনে ৩০% থেকে ৫০% পর্যন্ত কমিশন দেওয়া হয়। তবে কোন কোন ক্ষেত্রে এটি ৮০% পর্যন্ত হতে পারে।
আপনার কমিশন রেট নির্ভর করবে আপনি কোন প্রোডাক্ট প্রোমোট করছেন এবং কোন মার্কেটপ্লেসের সাথে কাজ করছেন তার উপর। তাই শুরু করার আগে বিভিন্ন প্রোগ্রামের কমিশন স্ট্রাকচার দেখে নিতে হবে। আর আপনি সবসময় চেষ্টা করবেন এমন কোন প্ল্যাটফর্মে যুক্ত হওয়ার যে করতে প্রোডাক্টের সাথে সাথে কমিশন রেটও ভালো।
একজন নতুন এফিলিয়েট মার্কেটারের মাসিক আয় কত?
একজন নতুন এফিলিয়েট মার্কেটারের মাসিক আয় প্রথমদিকে তেমন উল্লেখযোগ্য নাও হতে পারে। অনেকেই প্রথম কয়েক মাসে ৫০ ডলার থেকে ১০০ ডলার আয় করতে পারেন। নতুনদের ক্ষেত্রে এই পরিমাণ ইনকাম পর্যন্ত করে না। দেখা যায় কাজ শুরু করার প্রথম কয়েক মাস ইনকাম শূন্য থাকে। তবে এটি ধীরে ধীরে বাড়বে যখন আপনার কনটেন্ট বেশি মানুষ দেখবে এবং আপনার অডিয়েন্স বাড়বে।
নতুন হিসেবে প্রথম বছর আপনার ইনকাম কম হলেও সময়ের সাথে সাথে আপনি যতো বেশি কনটেন্ট তৈরি করবেন এবং যতো বেশি সময় ব্যয় করবেন, ততোই আপনার আয় বাড়বে। আপনি যদি ধারাবাহিকভাবে কাজ করেন এবং সঠিক স্ট্রাটেজি ব্যবহার করেন, তবে এক বছরের মধ্যে ভালো একটি ইনকাম সোর্স তৈরি করতে পারবেন।
উপসংহার
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং আসলে অনেকটা নিজের জন্য একটা প্যাসিভ ইনকাম সোর্স তৈরি করার মতো। শুরুটা হয়তো একটু সময়সাপেক্ষ হবে, কিন্তু একবার আপনি যখন এর মধ্যে ঢুকে যাবেন, তখন ধীরে ধীরে ভালো আয় করতে পারবেন। আশা করি, এই আর্টিকেল থেকে আপনারা অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং সম্পর্কে ভালো ধারণা পেয়েছেন। আরও নতুন কিছু জানার জন্য আমাদের অন্যান্য আর্টিকেলগুলোতে চোখ রাখতে ভুলবেন না!