আচ্ছা, কখনো কি ভেবেছেন, ইন্টারনেটে যত কন্টেন্ট পড়েন যেমন—ব্লগ, প্রোডাক্ট রিভিউ, সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট—এসবের পেছনে কারা কাজ করে? এর উত্তর হলো, কন্টেন্ট রাইটাররা। কন্টেন্ট রাইটিং এমন একটা কাজ, যেখানে আপনি শুধু নিজের চিন্তাভাবনা লেখার মাধ্যমে শেয়ার করতে পারেন এবং এর পাশাপাশি মানুষের বিভিন্ন সমস্যার সমাধানেও সাহায্য করতে পারেন।

এই কাজটা আজকের দিনে বেশ জনপ্রিয় কারণ আপনি চাইলে ঘরে বসে ফ্রিল্যান্সিং থেকে শুরু করে বড় বড় ব্র্যান্ডের জন্যও কাজ করতে পারেন। তবে, অনেকেই প্রশ্ন করেন—”কন্টেন্ট রাইটিং শিখতে কত দিন লাগে?” কিংবা “এটা শুরু করার জন্য আসলে কী কী জানতে হয়?” আজকের আলোচনায় আমরা এসব প্রশ্নের সহজ এবং বাস্তবসম্মত উত্তর খুঁজে বের করার চেষ্টা করব। তাহলে চলুন এই বিষয়ে বিস্তারিত আকারে জেনে নেই।
কন্টেন্ট রাইটিং বলতে কী বোঝায় এবং এটি কেন গুরুত্বপূর্ণ?

আচ্ছা, কন্টেন্ট রাইটিং কথাটা শুনলে হয়তো মনে হতে পারে যে কনটেন্ট রাইটিং মানে শুধুই লিখালিখি করা। কিন্তু বাস্তবতা হলো, কন্টেন্ট রাইটিং অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ এবং একটু গভীর বিষয়। সহজ ভাষায় বললে,কন্টেন্ট রাইটিং হচ্ছে এমন একটা প্রক্রিয়া, যেখানে একটা নির্দিষ্ট টপিক নিয়ে লেখালেখি করা হয়, যাতে মানুষ সেই বিষয়ে জানতে পারে, বুঝতে পারে, বা কোনো কিছু শেখে।
ধরে নেন, আপনি যদি কোনো প্রোডাক্ট বা সার্ভিস সম্পর্কে কিছু লেখেন, আপনি শুধুমাত্র কেবল তথ্য প্রদান করেন না, বরং মানুষের মনের মধ্যে কিছুটা সমস্যা এবং কনফিউশনও দূর করতে পারে। যেমন যদি আপনি ‘গ্যাজেটস কেনার জন্য টিপস’ নিয়ে ব্লগ লেখেন, সেটা শুধু গ্যাজেটসের বিষয়ে না, বরং পাঠকদের ওই বিষয়ে নিত্য নতুন বিষয় সম্পর্কে জানতেও এবং সেই টপিক সম্পর্কে আরও পরিষ্কার ধারণাও দিবে।
এখন, কন্টেন্ট রাইটিং কেন এত গুরুত্বপূর্ণ? ভাবুন তো, যখন আপনি ইন্টারনেটে কিছু সার্চ করেন, সেখানেই নানা ধরনের কন্টেন্ট আসে—কিছু কাজে লাগে, কিছু কাজে লাগে না। এই ক্ষেত্রে যদি লেখাগুলো ভালো না হয়, তা হলে পাঠক সেই কন্টেন্টের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে। যেমন, যদি আপনি একটি ব্লগ পোস্টের মাধ্যমে কোনো তথ্য দেওয়ার কিংবা প্রকাশ করার চেষ্টা করেন কিন্তু সেটা একদম বোরিং বা জটিল ভাষায় লেখা হয়, তাহলে তখন পাঠক তাকে পড়ে কিছুই বুঝতে পারবে না। অন্যদিকে, যদি লেখাটা সহজ, সোজাসাপ্টা এবং আকর্ষণীয় হয়, তবে সেটা পাঠককে আরও বেশি আকৃষ্ট করবে, এবং নিজে জানার পাশাপাশি অন্য কেউ পড়ার জন্য রিকমেন্ড করতে পারে।
এছাড়া, কন্টেন্ট রাইটিং SEO (সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন)-এর জন্যও অনেক বেশি পরিমানে গুরুত্বপূর্ণ। আপনি যদি ভালো কন্টেন্ট লিখে তার সঙ্গে সঠিক কিওয়ার্ড যুক্ত করেন, তাহলে গুগল বা অন্যান্য সার্চ ইঞ্জিন আপনার সাইটকে ভালোভাবে র্যাংক করবে, যা আপনার সাইটে আরও বেশি ভিজিটর আনবে।
কন্টেন্ট রাইটিং শিখতে কত সময় লাগে?
এটা একটা খুবই সাধারণ প্রশ্ন, কিন্তু এই প্রশ্নের উত্তরটা পুরোপুরি আপনার নিজের উপর নির্ভর করছো। ধরুন, আপনি যদি একদম নতুন content writer হয়ে থাকেন, তাহলে আপনাকে মনে রাখতে হবে, কন্টেন্ট রাইটিং শিখতে এক সপ্তাহ বা এক মাসের মধ্যে আপনি মাস্টার হতে পারবেন না। তবে যদি প্রতিদিন একটু একটু করে সময় দেন, এবং নিয়মিত অনুশীলন করেন, তবে ৩-৬ মাসের মধ্যে বেশ ভালো ধারণা পাওয়া সম্ভবনা থাকবে।
এটা যেমন ভিন্ন মানুষের ক্ষেত্রে ভিন্ন হয়ে থাকে, তেমনি একেকজনের শেখার গতির উপরে ও নির্ভর করে। এক্ষেত্রে একটা উদাহরণ দেওয়া যায়—ধরুন, কেউ যদি আগে থেকেই লেখালেখি করতে পছন্দ করে থাকে, তাহলে তাকে নতুন টেকনিক শেখাতে সময় কম লাগবে। কিন্তু, যদি আপনি পুরোপুরি নতুন হন এবং লেখালেখির প্রতি আগ্রহও একটু কম থাকে, তবে এই প্রক্রিয়াটা একটু ধীর গতিতে চলবে, এবং কাজগুলো শিখতে বেশি সময় লাগবে।
আর একটা বিষয়, কন্টেন্ট রাইটিং আসলে শুধু লেখার ব্যাপার নয়, এর মধ্যে রিসার্চ করার বিষয়টিও অন্তর্ভুক্ত থাকে। আপনি কোনো বিষয়ে লিখলে, তার পুরো ব্যাকগ্রাউন্ড বুঝে, সঠিক তথ্য সংগ্রহ করে তারপর লেখাটা সাজানো লাগে। এই জ্ঞানটা একদিনে আসবে না, তবে কিছুদিন নিয়মিত কাজ করলে এই প্রক্রিয়াটি খুব সহজ হয়ে যাবে।
তবে, আপনি যদি একজন প্রফেশনাল লেখক হতে চান, তবে এক বছরের বেশি সময়ও লেগে যেতে পারে। তবে, একে কোনো চাপের কাজ হিসেবে না দেখে, বরং একটা নতুন দক্ষতা শেখার সুযোগ হিসেবে ভাবুন। এবং যখন আপনি কন্টেন্ট রাইটিং এর প্রতি নিজের ভালোবাসা তৈরি হবে, তখন সময় বিষয়টা খুব একটা গুরুত্বপূর্ণ হবে না।
কন্টেন্ট রাইটিং শুরু করার জন্য কী কী যোগ্যতা থাকা দরকার?
আপনাকে এটা মনে রাখতে হবে, কন্টেন্ট রাইটিং করার জন্য বিশেষ কোনো একাডেমিক ডিগ্রি কিংবা সার্টিফিকেট প্রয়োজন হয় না। আপনি যদি নিজের মনের মধ্যে লেখালেখি করার ইচ্ছা রাখেন, এবং এটা যদি আপনার শখ বা প্যাশন হয়, তবে আপনার কিছু বেসিক স্কিল থাকলেই চলবে। আর যদি আপনি সম্পূর্ণ নতুন হয়ে থাকেন সেক্ষেত্রেও খুব একটা বড় প্রবলেম হবে না কিন্তু নিয়মিত কাজ চালিয়ে যেতে হবে।
প্রথমত, কন্টেন্ট রাইটিং শিখতে হলে আপনার অবশ্যই লেখালেখির প্রতি ভালোবাসা থাকা খুব জরুরি এবং অনেক গুরুত্বপূর্ণ। যদি আপনি লেখার ক্ষেত্রে আগ্রহী না হন, তবে আপনার জন্য কন্টেন্ট রাইটিং শেখার বিষয়টি অনেক কঠিন হয়ে যাবে। আর যদি আপনি লেখালেখি পছন্দ করেন, তবে নিজেকে একটু পূর্বের তুলনায় বেশি সময় দিবেন এবং তা লেখালেখির স্কিল উন্নত করার চেষ্টা করবেন।
এছাড়া,কনটেন্ট রাইটিং এর ক্ষেত্রে গবেষণার দক্ষ (research skill) হওয়াও অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কন্টেন্ট রাইটিংয়ের সময় আপনি যে টপিক নিয়ে লিখছেন তা সম্পর্কে ভালো রিসার্চ করতে হবে এবং সেই বিষয়ে ভালোভাবে ধারণা নিতে হবে। আপনি যেই বিষয় সম্পর্কে লিখবেন, সে সম্পর্কে সঠিক তথ্য বের করতে হবে। কখনও কখনও, কন্টেন্ট রাইটিংয়ের মধ্যে ইনফরমেশন সঠিকভাবে তুলে ধরার জন্য আরও গভীরভাবে রিসার্চ করতে হয়।
কনটেন্ট রাইটিং এ ভালো করতে হলে আপনাকে অবশ্যই ভালো পরিমাণে ভাষাগত দক্ষতা থাকতে হবে। কোনো কিছু লিখলে সেটি যেন স্পষ্ট এবং সহজবোধ্য হয়, সেটা মাথায় রাখতে হবে। আপনার পাঠক যেন আপনার লেখা পড়ে কোনো জটিলতা বা বিভ্রান্তিতে না পড়ে, সেজন্য সহজ ভাষায় লেখা দরকার সব সময়।
এছাড়া, SEO এর কমপ্লিট ধারণা থাকতে হবে, অর্থাৎ এসইও বিষয়টা সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জ্ঞান রাখতে হবে । গুগল এবং অন্যান্য সার্চ ইঞ্জিনে যদি আপনার কন্টেন্টকে ভালো র্যাংক করতে চান, তবে অবশ্যই ভালোভাবে এস ই ও বিষয়টি শিখতে হবে। জানতে হবে কিভাবে গুগলে আর্টিকেল কে সহজে র্যাঙ্ক করানো যায় এবং সেখান থেকে বেশি পরিমাণে ট্রাফিক অর্জন করা যায়। আর অবশ্যই কিভাবে কিওয়ার্ড ব্যবহার করতে হয়, কীভাবে মেটা ট্যাগ সঠিকভাবে ব্যবহার করা যায়, কিভাবে কন্টেন্টটি গুগল ফ্রেন্ডলি করতে হবে এই বিষয়গুলো সম্পর্কে ধারণা থাকে।
তবে, এই স্কিলগুলোর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে অভ্যাস। আপনি যত বেশি লেখবেন, ততই আপনি ভালো হতে থাকবেন। তাই শুরুটা করতে কোনো বিশেষ যোগ্যতা বা সনদ দরকার নেই, কিন্তু যদি আপনি নিয়মিত লেখেন এবং নিজের ভুলগুলো সংশোধন করেন, তাহলে দক্ষতা অর্জন খুব সহজ হবে।
কীভাবে একজন সম্পূর্ণ নতুন ব্যক্তি কন্টেন্ট রাইটিং শুরু করতে পারে?

আপনি যদি এই সেক্টরে একদম নতুন হন এবং কন্টেন্ট রাইটিং শুরু থেকে শুরু করতে চান, তাহলে প্রথমেই একটা কথা বুঝে নিতে হবে—এটা এমন কোনো জটিল কাজ নয়, যা আপনাকে একসঙ্গে সব শিখতে হবে। বরং ধাপে ধাপে এগোলেই আপনি দ্রুত সফল হতে পারবেন।
এই ক্ষেত্রে আপনার প্রথম ধাপটা হলো আপনার উদ্দেশ্য ঠিক করা। মানে, আপনি কন্টেন্ট রাইটিং কেন শিখতে চান? এটা কি শুধুমাত্র শখের জন্য, নাকি ভবিষ্যতে ফ্রিল্যান্সিং বা চাকরির মাধ্যমে উপার্জন করতে চান? আপনার লক্ষ্য যদি পরিষ্কার থাকে, তবে শেখার প্রক্রিয়া আরও সহজ হবে।
এরপর আসা যাক কীভাবে শুরু করবেন।
- নিজের জন্য কিছু লিখার চেষ্টা করবেন: অনেকেই মনে করে, শুরুতেই কোনো বড় প্ল্যাটফর্মে কাজ পেতে হবে এবং হাজার হাজার ডলার ইনকাম করতে হবে। কিন্তু প্রাথমিকভাবে কখনোই সম্ভব নয়। এইজন্য আপনি চাইলে নিজের জন্য ছোট ছোট ব্লগ তৈরি করতে পারেন। ধরুন, এমন একটি বিষয় নিয়ে লিখুন যা আপনার আগ্রহের, যেমন আপনার পছন্দের সিনেমা, বই, বা কোনো নতুন প্রযুক্তি। সে ক্ষেত্রে আপনার প্রাথমিক ভিত্তি এবং লেখার কোয়ালিটি আপনি নিজেই নির্ধারণ করতে পারবেন।
- ফ্রি রিসোর্স ব্যবহার করুন: ইন্টারনেটে এখন প্রচুর টিউটোরিয়াল, ব্লগ, এবং ভিডিও আছে যেগুলো থেকে আপনি কন্টেন্ট রাইটিংয়ের বেসিক জিনিসগুলো সহজেই শিখতে পারবেন। আর এখন বর্তমানে ইউটিউবে হাজার হাজার কন্টেন্ট রাইটিং এর টিউটোরিয়াল রয়েছে যেগুলো শেখে আপনি আর এখন বর্তমানে ইউটিউবে হাজার হাজার কন্টেন্ট রাইটিং এর টিউটোরিয়াল রয়েছে যেগুলো শেখে আপনি বেসিক বিষয়গুলো অনায়াসে ক্লিয়ার করতে পারবেন।
- অনুশীলন করা: প্রতিদিন যদি ৩০ মিনিটও সময় দেন লিখতে, তাহলে নিজেকে অনেকটাই পূর্বের তুলনায় উন্নত করতে পারবেন। শুরুতে খুব ভালো না হলেও চলবে, তবে অবশ্যই কাজ চালিয়ে যেতে হবে। কারণ, অভ্যাসই একদিন আপনার কাজকে ধীরে ধীরে পরিপূর্ণ করবে।
- ফিডব্যাক নিবেন: আপনার লেখা যদি অন্য কাউকে পড়তে দেন, তাহলে তারা আপনাকে কিছু দরকারি সাজেশন নিতে পারেন। এর মাধ্যমে আপনি নিজের ভুলগুলো বুঝতে পারবেন, সেগুলোকে সংশোধন করে আরো ভালো স্কিল ডিভ্লপ করতে পারবেন।
এখন প্রশ্ন হলো, এই প্রক্রিয়ায় কত সময় লাগবে? প্রথমত আপনাকে ধৈর্য ধরতে হবে, কারণ আপনি যত বেশি সময় দেবেন, তত দ্রুত স্কিলের উন্নতি হবে। নিজের লেখা নিয়ে আত্মবিশ্বাস তৈরি করতে ছোট ছোট প্রজেক্ট নিবেন, এবং সেগুলোকে কমপ্লিট করার সব সময় চেষ্টা করবেন।
সবচেয়ে বড় বিষয়, “পারফেক্ট হতে হবে”—এই ভয়টা ভুলে যান। শুরুতেই সবকিছু নিখুঁত হবে না, এটাই স্বাভাবিক। তবে লিখতে লিখতে আপনি নিজের ভুলগুলো ধরতে পারবেন এবং এগুলোকে সংশোধন করে নিজের লেখা গুলোর মধ্যে উন্নতি করতে পারবেন। তাই, যদি আজই শুরু করেন, কয়েক মাসের মধ্যেই কন্টেন্ট রাইটিংয়ে আপনার দক্ষতা তৈরি হতে শুরু করবে।
কন্টেন্ট রাইটিংয়ে কোন ধরনের ভুলগুলো এড়ানো উচিত?
কনটেন্ট writing এর ক্ষেত্রে নতুনদের ক্ষেত্রে কিছু সাধারণ ভুল দেখা যায়, যেগুলো এড়ানো গেলে আপনার কন্টেন্ট আরও ভালো এবং কোয়ালিটি সম্পূর্ণ হবে। প্রথমেই সবচেয়ে বড় ভুল হলো কপিপেস্ট কন্টেন্ট লেখা, যা প্রায় সকল নতুন রাইটারদের ক্ষেত্রেই লক্ষ্য করা যায়। এটি একদমই কখনোই করার চেষ্টা করবেন না। আপনি যদি অন্য কারও লেখা কপি করেন, সেটা শুধু আপনার বিশ্বাসযোগ্যতাকেই নষ্ট করবে না, বরং গুগলও এই ধরনের কন্টেন্টকে ডিমোটিভেট এবং সেগুলোকে কখনোই গুগলে র্যাঙ্ক করায় না।
দ্বিতীয়ত, অনেকেই ভাবেন, “কিওয়ার্ড যত বেশি ব্যবহার করব, র্যাঙ্কিং তত ভালো হবে।” কিন্তু এটা ঠিক না, বরং গুগল এর বিপরীতে কাজ করতেছে। এটা কিওয়ার্ড স্টাফিং হিসেবে পরিচিত, এবং এটি আপনার কন্টেন্টের মান একেবারে নষ্ট করে দেয়। এই ধরনের অবৈধ টেকনিক বদলে চেষ্টা করবেন, কিওয়ার্ডগুলো প্রাসঙ্গিকভাবে ব্যবহার করতে।
এছাড়া, অনেক সময় আমরা কন্টেন্ট লেখার সময় পাঠকের কথা মাথায় রাখি না। ধরুন, আপনার কন্টেন্টের ভাষা এত জটিল যে সাধারণ পাঠক সেটা বুঝতেই পারছে না। এটা বড় একটা ভুল। আপনি যেটা লিখবেন, সেটা যেন অবশ্যই সহজবোধ্য হয় এবং পাঠকের সমস্যার সমাধান করতে সাহায্য করে। আর যত বেশি সম্ভব লেখাগুলোকে সহজে এবং সাবলীলভাবে লেখার চেষ্টা করবেন। আর লেখাগুলোর মধ্যে অবশ্যই যথাযথ ইনফরমেশন এবং কোয়ালিটি যুক্ত করার চেষ্টা করবেন।
কনটেন্ট রাইটিং এর ক্ষেত্রে আরেকটা বড় ভুল হলো প্রুফরিড না করা। আমরা অনেক সময় মনে করি, লেখা একবার হয়ে গেলে সেটা ঠিকঠাক হয়ে গেছে। কিন্তু ভুল বানান, ভুল তথ্য, বা অপরিষ্কার বাক্যগঠনের কারণে পাঠক বিরক্ত হয়ে থাকে এবং google এ র্যাংক করার ক্ষেত্রেও এটি অনেক খারাপ একটি প্রভাব রাখে। এজন্য অবশ্যই লেখার পর একবার বা দুবার সেটা চেক করা উচিত।
শেষে, পাঠকের সঙ্গে সংযোগ তৈরি না করা আরেকটা মারাত্মক ভুল। আপনি যদি শুধু তথ্য দিয়ে যান, কিন্তু পাঠক সেটা পড়ে কোনো অনুভূতি না পায় বা আগ্রহ তৈরি না করে, তাহলে কন্টেন্টের মূল উদ্দেশ্যটাই হারিয়ে যায়। তাই, এমনভাবে লিখুন যেন পাঠক আপনার কন্টেন্ট পড়ে আরও জানতে চায় বা কিছু শিখতে পারে।
কন্টেন্ট রাইটিং থেকে উপার্জন কীভাবে সম্ভব?
কন্টেন্ট রাইটিং থেকে উপার্জনের সুযোগ এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি, কিন্তু কম্পিটিটিভ । তবে আপনি কীভাবে কনটেন্ট রাইটিং করে ইনকাম শুরু করবেন? প্রথমে নিজের দক্ষতা বাড়ানো দিকে বেশি লক্ষ্য রাখবেন এবং ছোট ছোট কাজ দিয়ে শুরু করার চেষ্টা করবেন। যখন আপনি কিছুটা অভিজ্ঞতা অর্জন করবেন, তখন বড় বড় প্রজেক্ট নিয়ে কাজ করার চেষ্টা করবেন। প্রথমে যদি বড় প্রজেক্ট নিয়ে কাজ করতে যান সে ক্ষেত্রে সবগুলো উলটপালট হয়ে যেতে পারে। এজন্য আগে স্কিল ভালোভাবে অর্জন করতে হবে তারপর ইনকাম করার দিকে মনোযোগী হতে হবে।
বর্তমানে ফ্রিল্যান্সিং হলো কন্টেন্ট রাইটিং থেকে উপার্জনের সবচেয়ে সহজ এবং জনপ্রিয় উপায়। আপওয়ার্ক (Upwork), ফাইভার (Fiverr), এবং পিপল পার আওয়ার (People Per Hour)-এর মতো প্ল্যাটফর্মে ক্লায়েন্টরা নানা ধরনের কাজের জন্য রাইটারদের খোঁজেন। প্রথমদিকে, আপনি যদি কম রেটে কাজ করেন এবং ভালো রিভিউ পান, তাহলে ভবিষ্যতে বেশি রেটে কাজ পাওয়া সহজ হবে।
এছাড়া, নিজের ব্লগ শুরু করেও আয় করা সম্ভব। ভাবুন তো, আপনি যদি একটা ব্লগ শুরু করেন এবং সেখানে ট্রাফিক বাড়ে, তাহলে আপনি গুগল ‘অ্যাড’ ‘সেন্স’ বা অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে আয় করতে পারবেন।
অনেকে কনটেন্ট রাইটিং শিখিয়ে গোস্ট রাইটিং-এও ক্যারিয়ার শুরু করেন। এখানে আপনি অন্য কারও জন্য কন্টেন্ট লিখবেন, এবং তারা সেই কন্টেন্ট নিজের নামে প্রকাশ করবে। বড় বড় ব্র্যান্ড বা ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য এই ধরনের কাজের চাহিদা বেশ ভালো।
সবশেষে, আপনি চাইলে বড় বড় কোম্পানির জন্য ফুল-টাইম কন্টেন্ট রাইটার হিসেবেও কাজ করতে পারেন। এমনকি সোশ্যাল মিডিয়ার জন্য কপিরাইটিং বা স্ক্রিপ্ট রাইটিংও এখন অনেক জনপ্রিয় হয়ে উঠতেছে।
কন্টেন্ট রাইটিং থেকে উপার্জনের বিষয়টা আসলে নির্ভর করে আপনার দক্ষতা, ধৈর্য, এবং পরিশ্রমের ওপর। যদি আপনি নিয়মিত লেখালেখি করেন, নিজের কাজে উন্নতি আনেন এবং ক্লায়েন্টদের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক তৈরি করেন, তাহলে এই পেশা থেকে দীর্ঘমেয়াদে ভালো আয় করা সম্ভব।
উপসংহার
সব কথা মিলিয়ে, কন্টেন্ট রাইটিং এমন একটা স্কিল যা শেখা একদমই অসম্ভব কিছু নয়। আরো সহজ ভাবে বলতে গেলে কন্টেন্ট রাইটিং এমন একটি বিষয়ে যা আমাদের সবার মাঝেই বিদ্যমান। হয়তো শুরুতে একটু কঠিন মনে হতে পারে, কিন্তু ধীরে ধীরে যখন আপনি লিখতে শুরু করবেন এবং নিজেকে সময় দেবেন, তখন দেখবেন এই কাজটাই কতটা উপভোগ্য হয়ে উঠেছে। আর সবচেয়ে ভালো ব্যাপার হলো, এই স্কিলের মাধ্যমে শুধু আয় নয়, আপনি নিজের ক্রিয়েটিভ দিকটাও প্রকাশ করতে পারবেন।
কিন্তু হ্যাঁ, শুধু শেখার দিকেই না, প্র্যাকটিসের দিকেও মনোযোগ দিতে হবে। কারণ, প্রতিদিন একটু একটু করে নিজেকে উন্নত করাই হলো কন্টেন্ট রাইটিংয়ের আসল মন্ত্র। তো আজকের এই আর্টিকেল এই পর্যন্তই যদি আর্টিকেলটি ভালো লাগে তাহলে অবশ্যই কমেন্টে জানাতে পারেন আর যদি এই রিলেটেড আরও কোন প্রশ্ন থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট সেকশনে জানাবেন।