
আজকের ডিজিটাল যুগে অনলাইন শপিং এর জনপ্রিয়তা দিন দিন বাড়ছে। এই ট্রেন্ডের সাথে তাল মিলিয়ে ড্রপশিপিং বিজনেস মডেল এখন অনেক উদ্যোক্তাদের কাছে আকর্ষণীয় অপশন হয়ে উঠেছে। কম ইনভেস্টমেন্ট, লো রিস্ক, এবং হাই পটেনশিয়াল – এই ফিচারগুলো ড্রপশিপিংকে আরো ইউনিক করেছে। গ্লোবাল ড্রপশিপিং মার্কেট সাইজ 2021 সালে ছিল প্রায় 225.99 বিলিয়ন ডলার, আর 2028 সাল নাগাদ এটা 557.93 বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে বলে প্রেডিকশন করা হচ্ছে। কিন্তু এই বিজনেস মডেল ঠিক কিভাবে কাজ করে? কি কি বেনিফিট আছে? চ্যালেঞ্জগুলো কি? আর কিভাবে এই ফিল্ডে সাকসেসফুল হওয়া যায়? চলুন এই আর্টিকেলে ড্রপশিপিং বিজনেস সম্পর্কে ডিটেইলে জেনে নেই।
ড্রপশিপিং কী? ড্রপশিপিং বিজনেস থেকে ইনকাম করে কিভাবে?

ড্রপশিপিং হচ্ছে একটা বিজনেস মডেল যেখানে আপনি প্রোডাক্ট বিক্রি করবেন কিন্তু নিজে স্টক রাখবেন না। এটা কাজ করে এভাবে – আপনি একটা অনলাইন স্টোর সেট আপ করবেন, কাস্টমার অর্ডার দিলে আপনি সেই অর্ডার সাপ্লায়ারের কাছে পাঠিয়ে দিবেন। সাপ্লায়ার ডাইরেক্ট কাস্টমারের কাছে প্রোডাক্ট পাঠিয়ে দিবে।
ড্রপশিপিং থেকে আয় করার জন্য প্রথমে একটা নিশ সিলেক্ট করতে হবে। এরপর ভালো সাপ্লায়ার খুঁজে বের করতে হবে যারা কোয়ালিটি প্রোডাক্ট দিতে পারবে। তারপর একটা ই-কমার্স ওয়েবসাইট তৈরি করতে হবে যেখানে আপনি প্রোডাক্ট লিস্ট করবেন। মার্কেটিং এর মাধ্যমে কাস্টমার আকর্ষণ করতে হবে। যখন সেল হবে, আপনি কাস্টমারের থেকে বেশি দামে বিক্রি করে লাভ করবেন।
সাকসেসফুল হওয়ার জন্য ট্রেন্ডি প্রোডাক্ট সিলেক্ট করা, কমপিটিটিভ প্রাইসিং, ভালো কাস্টমার সার্ভিস দেওয়া খুবই ইম্পর্ট্যান্ট। সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং, ইমেইল মার্কেটিং ইত্যাদি টেকনিক ইউজ করে সেলস বাড়ানো যায়। রিগুলার নতুন প্রোডাক্ট অ্যাড করা এবং স্টোরের লুক আপডেট রাখা দরকার।
ড্রপশিপিং কিভাবে কাজ করে?

ড্রপশিপিং একটা মডার্ন বিজনেস মডেল যা অনলাইনে প্রোডাক্ট সেলিং এর জন্য পপুলার। এটা এভাবে কাজ করে – আপনি একটা ওয়েবসাইট বা অনলাইন স্টোর সেট আপ করবেন যেখানে প্রোডাক্ট লিস্ট করা থাকবে। কাস্টমার যখন অর্ডার দিবে, আপনি সেই অর্ডার ইনফরমেশন সাপ্লায়ারের কাছে ফরওয়ার্ড করে দিবেন। সাপ্লায়ার তারপর ডাইরেক্ট কাস্টমারের কাছে প্রোডাক্ট শিপ করবে। আপনি মাঝখানে থেকে প্রোডাক্টের রিটেইল প্রাইস এবং হোলসেল প্রাইসের ডিফারেন্স থেকে প্রফিট করবেন।
ড্রপশিপিং মূলত কিভাবে কাজ করেন নিচে তার একটি উদাহরণ দেয়া হলোঃ
ধরা যাক, আপনি স্মার্টওয়াচ বিক্রি করার জন্য একটা অনলাইন স্টোর খুলেছেন। আপনি Shopify প্ল্যাটফর্মে “টেক টাইম” নামে একটা ওয়েবসাইট তৈরি করলেন। এখন AliExpress থেকে একটা স্মার্টওয়াচ খুঁজে পেলেন যার দাম 20 ডলার। আপনি সেটা আপনার সাইটে 40 ডলারে লিস্ট করলেন।
একজন কাস্টমার আপনার সাইটে এসে ওয়াচটা পছন্দ করলো এবং অর্ডার দিলো। সে 40 ডলার পেমেন্ট করলো। এখন আপনি AliExpress এ গিয়ে সেই ওয়াচটা অর্ডার দিলেন কাস্টমারের ঠিকানায়। আপনি 20 ডলার পে করলেন।
AliExpress থেকে সরাসরি কাস্টমারের কাছে ওয়াচটা চলে গেলো। কাস্টমার জানেই না যে আপনি নিজে প্রোডাক্টটা হ্যান্ডেল করেননি। এভাবে আপনি 20 ডলার প্রফিট করলেন।
এই প্রসেসে আপনাকে কোনো ইনভেন্টরি মেইনটেইন করতে হলো না। শিপিংয়ের ঝামেলাও নিতে হলো না। শুধু ওয়েবসাইট মেইনটেইন এবং মার্কেটিং করে অর্ডার জেনারেট করাই আপনার কাজ। এভাবেই ড্রপশিপিং বিজনেস চলে।
এই সিস্টেমে আপনাকে নিজে কোনো ইনভেন্টরি স্টক রাখতে হয় না বা শিপিং হ্যান্ডেল করতে হয় না। ফলে কম ইনভেস্টমেন্টে এবং কম রিস্কে বিজনেস শুরু করা যায়। তবে সাকসেসফুল হওয়ার জন্য সঠিক প্রোডাক্ট সিলেকশন, রিলায়েবল সাপ্লায়ার ফাইন্ডিং এবং এফেক্টিভ মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজি অ্যাপ্লাই করা খুবই ইম্পর্ট্যান্ট।
ড্রপশিপিং বিজনেস শুরু করার জন্য কি কি লাগে?
ড্রপশিপিং বিজনেস শুরু করার জন্য প্রথমেই একটা নিশ সিলেক্ট করা দরকার – যেমন ফ্যাশন, ইলেক্ট্রনিক্স, হোম ডেকোর ইত্যাদি। এরপর ওই নিশের জন্য রিলায়েবল সাপ্লায়ার খুঁজে বের করতে হবে। একটা ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম সিলেক্ট করে সেখানে অনলাইন স্টোর সেট আপ করতে হবে। প্রোডাক্ট ইমেজ, ডিসক্রিপশন, প্রাইসিং ইত্যাদি অ্যাড করে স্টোর রেডি করতে হবে। পেমেন্ট গেটওয়ে ইন্টিগ্রেট করতে হবে যাতে কাস্টমার পেমেন্ট করতে পারে। মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজি প্ল্যান করতে হবে – সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং, সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন, পেইড অ্যাডস ইত্যাদি। কাস্টমার সাপোর্ট সিস্টেম সেট আপ করতে হবে। লিগ্যাল এবং ট্যাক্স রিকোয়ারমেন্টস চেক করে নিতে হবে। এছাড়া একটা বিজনেস প্ল্যান তৈরি করা ভালো যাতে টার্গেট, বাজেট, গ্রোথ স্ট্র্যাটেজি ইত্যাদি ক্লিয়ার থাকে।
ড্রপশিপিং এর সুবিধা এবং অসুবিধাগুলো কি কি?
ড্রপশিপিং এর অনেক সুবিধা আছে। প্রথমত, কম ক্যাপিটাল ইনভেস্টমেন্টে বিজনেস শুরু করা যায় কারণ আপনাকে আগে থেকে বড় পরিমাণে স্টক কিনে রাখতে হয় না। লোকেশন ফ্লেক্সিবিলিটি পাওয়া যায় – যেকোনো জায়গা থেকে বিজনেস চালানো যায়। প্রোডাক্ট ভ্যারাইটি বাড়ানো সহজ কারণ নতুন আইটেম অ্যাড করার জন্য নিজে স্টক করতে হয় না। ইনভেন্টরি ম্যানেজমেন্ট, প্যাকেজিং, শিপিং এর ঝামেলা থাকে না।
অন্যদিকে কিছু অসুবিধাও আছে। প্রফিট মার্জিন কম থাকে কারণ কম্পিটিশন বেশি। শিপিং টাইম কন্ট্রোল করা যায় না, যা কাস্টমার স্যাটিসফ্যাকশনে ইম্প্যাক্ট করতে পারে। প্রোডাক্ট কোয়ালিটি কন্ট্রোল করা কঠিন। ব্র্যান্ডিং চ্যালেঞ্জিং কারণ প্যাকেজিং কন্ট্রোল করা যায় না। ইনভেন্টরি আপডেট না থাকলে অতিরিক্ত অর্ডার নেওয়া হয়ে যেতে পারে। কাস্টমার সার্ভিস হ্যান্ডেল করা কম্প্লেক্স হতে পারে কারণ প্রোডাক্ট সম্পর্কে সব ইনফরমেশন নাও থাকতে পারে।
ড্রপশিপিং এ সাকসেসফুল হওয়ার টিপস কি কি?
ড্রপশিপিং এ সাকসেসফুল হওয়ার জন্য কয়েকটি প্রধান কী পয়েন্ট মাথায় রাখা জরুরি। প্রথমত, সঠিক নিশ সিলেকশন খুবই গুরুত্বপূর্ণ – ট্রেন্ডি এবং হাই ডিমান্ড প্রোডাক্ট নিয়ে কাজ করা ভালো। দ্বিতীয়ত রিলায়েবল সাপ্লায়ার খুঁজে বের করতে হবে যারা কোয়ালিটি প্রোডাক্ট এবং ফাস্ট শিপিং অফার করে। ওয়েবসাইট অপটিমাইজেশন করতে হবে – ইউজার ফ্রেন্ডলি ডিজাইন, ফাস্ট লোডিং স্পিড, মোবাইল রেস্পন্সিভ হওয়া জরুরি। কম্পিটিটিভ প্রাইসিং স্ট্র্যাটেজি অ্যাপ্লাই করতে হবে। এফেক্টিভ মার্কেটিং করতে হবে – সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং, ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং, কনটেন্ট মার্কেটিং ইত্যাদি। এক্সিলেন্ট কাস্টমার সার্ভিস প্রোভাইড করা খুবই ইম্পর্ট্যান্ট। রেগুলার নতুন প্রোডাক্ট অ্যাড করতে হবে। ডাটা অ্যানালাইসিস করে বিজনেস ইমপ্রুভ করার চেষ্টা করতে হবে। অর্ডার ফুলফিলমেন্ট প্রসেস অপটিমাইজ করতে হবে। লং টার্ম সাকসেসের জন্য নিজের ব্র্যান্ড বিল্ড করার চেষ্টা করা উচিত।
ড্রপশিপিং এর জন্য বেস্ট প্রোডাক্ট ক্যাটেগরি কোনগুলো?
ড্রপশিপিং এর জন্য বেস্ট প্রোডাক্ট ক্যাটেগরি সিলেক্ট করা খুবই ইম্পর্ট্যান্ট। ফ্যাশন অ্যাক্সেসরিজ একটা পপুলার চয়েস – সানগ্লাস, ওয়াচ, জুয়েলারি ইত্যাদি ড্রপশিপিং এর জন্য ভালো। হোম ডেকোর আইটেম যেমন ওয়াল আর্ট, ক্যান্ডেল হোল্ডার, কুশন কভার ইত্যাদিও ডিমান্ড আছে। গ্যাজেট এবং ইলেক্ট্রনিক্স অ্যাক্সেসরিজ যেমন ফোন কেস, ইয়ারফোন, চার্জার ইত্যাদি ভালো সেল করে। বিউটি এবং স্কিনকেয়ার প্রোডাক্ট, পেট অ্যাক্সেসরিজ, ফিটনেস গিয়ার, কিচেন গ্যাজেট ইত্যাদিও পপুলার। নিশ প্রোডাক্ট যেমন ইকো-ফ্রেন্ডলি আইটেম, ট্র্যাভেল অ্যাক্সেসরিজ ইত্যাদিও ভালো অপশন। তবে প্রোডাক্ট সিলেকশনের সময় শিপিং সাইজ এবং ওজন, প্রফিট মার্জিন, কম্পিটিশন, টার্গেট অডিয়েন্স ইত্যাদি ফ্যাক্টর কনসিডার করা উচিত। মার্কেট ট্রেন্ড রিসার্চ করে ডিমান্ড চেক করে নেওয়া ভালো।
ড্রপশিপিং এর জন্য রিলায়েবল সাপ্লায়ার কিভাবে খুঁজে পাওয়া যায়?
ড্রপশিপিং এর সাকসেস অনেকটাই নির্ভর করে রিলায়েবল সাপ্লায়ার পাওয়ার উপর। সাপ্লায়ার খোঁজার জন্য বিভিন্ন অপশন আছে। AliExpress, SaleHoo, Oberlo এর মত হোলসেল মার্কেটপ্লেস থেকে সাপ্লায়ার খুঁজে পাওয়া যায়। এছাড়া Doba, Wholesale Central এর মত ড্রপশিপিং ডাইরেক্টরি ব্যবহার করা যায়। গুগলে সার্চ করেও সাপ্লায়ার পাওয়া যায়। সাপ্লায়ার সিলেক্ট করার সময় তাদের রেটিং, রিভিউ, শিপিং টাইম, রিটার্ন পলিসি ইত্যাদি চেক করা উচিত। কয়েকটা ছোট অর্ডার দিয়ে টেস্ট করে দেখা যেতে পারে। প্রোডাক্ট কোয়ালিটি, কমিউনিকেশন, অর্ডার প্রসেসিং টাইম ইত্যাদি ভেরিফাই করা দরকার। মাল্টিপল সাপ্লায়ার রাখা ভালো যাতে একটা ফেইল করলে অন্যটা থেকে অর্ডার ফুলফিল করা যায়। সাপ্লায়ারের সাথে গুড রিলেশনশিপ মেইনটেইন করা উচিত। রেগুলার কমিউনিকেশন করা, ফিডব্যাক শেয়ার করা, বড় অর্ডার দেওয়া ইত্যাদির মাধ্যমে রিলেশনশিপ স্ট্রং করা যায়। তবে একটা সাপ্লায়ারের উপর পুরোপুরি নির্ভরশীল না হয়ে বিকল্প অপশন ওপেন রাখা ভালো।
ড্রপশিপিং বিজনেসে মার্কেটিং কিভাবে করা যায়?
ড্রপশিপিং বিজনেসে সাকসেসফুল হওয়ার জন্য এফেক্টিভ মার্কেটিং খুবই ইম্পর্ট্যান্ট। সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং একটা পাওয়ারফুল টুল – ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, পিনটারেস্ট ইত্যাদিতে রেগুলার পোস্ট করা, অ্যাড চালানো, এনগেজমেন্ট বাড়ানো দরকার। ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং ট্রাই করা যেতে পারে – নিশ রিলেটেড ইনফ্লুয়েন্সারদের সাথে কলাবোরেট করে প্রোডাক্ট প্রমোট করা। সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (SEO) করা জরুরি যাতে গুগল সার্চে ওয়েবসাইট র্যাংক করে। পেইড অ্যাডভারটাইজিং যেমন গুগল অ্যাডস, ফেসবুক অ্যাডস ইউজ করা যেতে পারে টার্গেটেড অডিয়েন্স রিচ করার জন্য। ইমেইল মার্কেটিং এর মাধ্যমে নিউজলেটার, প্রমো অফার, অ্যাবান্ডন কার্ট রিমাইন্ডার ইত্যাদি পাঠানো যায়। কনটেন্ট মার্কেটিং করা ভালো – ব্লগ পোস্ট, ভিডিও কনটেন্ট, ইনফোগ্রাফিক ইত্যাদি ক্রিয়েট করে অডিয়েন্স এনগেজ করা। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং প্রোগ্রাম লঞ্চ করা যেতে পারে। রিমার্কেটিং ক্যাম্পেইন চালানো যায় যাতে আগের ভিজিটররা আবার ফিরে আসে। রেফারেল প্রোগ্রাম ইমপ্লিমেন্ট করা যেতে পারে। সিজনাল অফার, ফ্ল্যাশ সেল ইত্যাদির মাধ্যমে সেলস বুস্ট করার চেষ্টা করা যায়।
ড্রপশিপিং বিজনেসের জন্য কোন ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম ভালো?
ড্রপশিপিং বিজনেসের জন্য বেশ কিছু ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম আছে। তবে Shopify সবচেয়ে পপুলার। এটা ইউজার ফ্রেন্ডলি এবং ড্রপশিপিং ফ্রেন্ডলি। Oberlo সহ অনেক ড্রপশিপিং টুল Shopify তে ইন্টিগ্রেট করা যায়। WooCommerce ও একটা ভালো অপশন। এটা WordPress এর সাথে ইন্টিগ্রেটেড। ফ্রি কিন্তু কাস্টমাইজেশন বেশি করা যায়। BigCommerce, Wix ইত্যাদিও ব্যবহার করা যায়। প্ল্যাটফর্ম বাছাই করার সময় বাজেট, টেকনিক্যাল স্কিল, স্কেলেবিলিটি ইত্যাদি কনসিডার করতে হবে। শুরুতে Shopify ভালো কারণ এতে ড্রপশিপিং রিলেটেড সব ফিচার আছে। তবে মাসিক চার্জ আছে। WooCommerce ফ্রি কিন্তু সেটাপ করতে একটু টেকনিক্যাল নলেজ লাগে।
ড্রপশিপিং বিজনেসে কমন মিসটেক কি কি এবং কিভাবে এড়ানো যায়?
ড্রপশিপিং বিজনেসে নতুনরা প্রায়ই কিছু কমন মিসটেক করে থাকে। একটা বড় মিসটেক হলো অনেক বেশি প্রোডাক্ট নিয়ে শুরু করা – এর বদলে কিছু সিলেক্টেড প্রোডাক্ট নিয়ে ফোকাস করা ভালো। অনেকে প্রাইস নিয়ে ভুল করে – খুব কম প্রফিট মার্জিন রাখে বা খুব বেশি প্রাইস সেট করে। কম্পিটিটিভ প্রাইসিং করা জরুরি। অনেকে সাপ্লায়ার রিসার্চ ঠিকমত করে না – এটা একটা বড় মিসটেক। রিলায়েবল সাপ্লায়ার খুঁজে বের করা খুবই ইম্পর্ট্যান্ট। কাস্টমার সার্ভিস নেগলেক্ট করা আরেকটা কমন মিসটেক – এটা বিজনেসের ইমেজ ডাউন করে। লিগ্যাল এবং ট্যাক্স ইস্যু ইগনোর করাও ভুল – এগুলো সিরিয়াসলি নেওয়া উচিত। ওয়েবসাইট অপটিমাইজেশন না করাও একটা মিসটেক – ইউজার ফ্রেন্ডলি, ফাস্ট লোডিং ওয়েবসাইট থাকা জরুরি। অনেকে মার্কেটিং বাজেট কম রাখে – এটাও ভুল, কারণ মার্কেটিং ছাড়া সেলস আসবে না। ডাটা ট্র্যাকিং এবং অ্যানালাইসিস না করাও একটা মিসটেক – রেগুলার পারফরম্যান্স চেক করা দরকার। শুধু প্রাইস নিয়ে কম্পিট করা ভুল – ভ্যালু অ্যাড করার চেষ্টা করা উচিত। এই মিসটেকগুলো এড়াতে প্রপার প্ল্যানিং, রিসার্চ এবং স্ট্র্যাটেজি ফলো করা দরকার।
ড্রপশিপিং বিজনেস শুরু করার জন্য কত টাকা লাগে?

ড্রপশিপিং বিজনেস শুরু করার জন্য খুব বেশি টাকা লাগে না। এটা একটা লো-কস্ট বিজনেস মডেল। মূলত আপনার একটা ওয়েবসাইট সেটাপ করার খরচ আর কিছু মার্কেটিং খরচ লাগবে। ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম যেমন Shopify এর মাসিক সাবস্ক্রিপশন ফি আছে। এছাড়াও ডোমেইন নেম কিনতে হবে। প্রাথমিক মার্কেটিং বাজেটও রাখতে হবে। তবে এসব মিলিয়ে ১০,০০০ থেকে ২৫০০০ টাকার মধ্যে শুরু করা সম্ভব। এরপর বিজনেস বাড়ার সাথে সাথে ইনভেস্টমেন্ট বাড়াতে পারেন। তবে অন্যান্য বিজনেসের তুলনায় এখানে প্রাথমিক ইনভেস্টমেন্ট অনেক কম। এই জন্য অনেকেই ড্রপশিপিং দিয়ে অনলাইন বিজনেস শুরু করে।
ড্রপশিপিং বিজনেস কি লং টার্মে সাসটেইনেবল?
ড্রপশিপিং বিজনেস লং টার্মে সাসটেইনেবল কিনা এটা নিয়ে অনেক ডিসকাশন হয়। এর পজিটিভ এবং নেগেটিভ দিক আছে। পজিটিভ দিক হলো – ই-কমার্স ইন্ডাস্ট্রি দ্রুত বাড়ছে, অনলাইন শপিং পপুলারিটি বাড়ছে। ড্রপশিপিং মডেল ফ্লেক্সিবল, স্কেলেবল এবং লো রিস্ক। নতুন নতুন টেকনোলজি আসছে যা ড্রপশিপিং আরও ইজি করছে। গ্লোবাল মার্কেটপ্লেস অ্যাক্সেস করা যাচ্ছে। অন্যদিকে চ্যালেঞ্জও আছে – কম্পিটিশন বাড়ছে, প্রফিট মার্জিন কমে যাচ্ছে। বড় ব্র্যান্ডরা ডাইরেক্ট কাস্টমার রিচ করছে। কাস্টমার এক্সপেক্টেশন বাড়ছে। তবে এসব চ্যালেঞ্জ ফেস করে সাসটেইনেবল ড্রপশিপিং বিজনেস করা সম্ভব।
উপসংহার
ড্রপশিপিং বিজনেস মডেল নিঃসন্দেহে ই-কমার্স জগতে একটা গেম চেঞ্জার এ রূপ নিয়েছে। লো ইনভেস্টমেন্ট, ফ্লেক্সিবিলিটি, এবং গ্লোবাল মার্কেট অ্যাক্সেস – এই ফিচারগুলো ড্রপশিপিংকে অনেক উদ্যোক্তার কাছে আকর্ষণীয় করে তুলেছে। তবে ড্রপ শিপিং এর মধ্যে এখনো কিছু চ্যালেঞ্জরয়েছে যেমন – কম্পিটিশন, কোয়ালিটি কন্ট্রোল, শিপিং ইস্যু ইত্যাদি। এই বিষয়গুলোকে ফিক্স করতে পারলে এই মার্কেটে ভালো কিছু করার সম্ভাবনা রয়েছে। আর সাকসেসফুল ড্রপশিপিং বিজনেস বিল্ড করতে হলে স্মার্ট স্ট্র্যাটেজি অ্যাপ্লাই করতে হবে – সঠিক নিশ সিলেকশন, রিলায়েবল সাপ্লায়ার ফাইন্ডিং, এফেক্টিভ মার্কেটিং, এক্সিলেন্ট কাস্টমার সার্ভিস। ফিউচারের দিকে তাকালে দেখা যায়, টেকনোলজির উন্নতি, অনলাইন শপিংয়ের পপুলারিটি বৃদ্ধি, এবং গ্লোবাল কানেক্টিভিটির কারণে ড্রপশিপিং সেক্টরের গ্রোথ পটেনশিয়াল হাই হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
আশা করি আজকের এই আর্টিকেলে আপনি ড্রপ শিপিং সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন এবং কিভাবে এখান থেকে কাজ করা যায় এবং আয় করা যায় এ বিষয়ে ও ক্লিয়ার হতে পেরেছেন।